প্রথমে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরাজয় তারপর শ্রীলংকার বিরুদ্ধে পরাজয়। কোনো অজুহাত দেননি সাকিব আল হাসান। পাকিস্তানি বোলাররা এতটাই ভালো, যেকোনো উইকেটেই তাঁদের মুখোমুখি হওয়া কঠিন। তাহলে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে কি হলো? বাংলাদেশ তো খুব ভালো বলে উইকেট দিয়ে আসেনি। দিয়েছে বাজে শট খেলে। শনিবার শ্রীলংকার কাছে পরাজিত হয়ে ম্যাচ শেষে সম্প্রচারকারী টেলিভিশনের সঞ্চালকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সাকিবের সহজ স্বীকারোক্তি, ‘আমরা কিছু বাজে শট খেলেছি। এমন উইকেটে ১৫ ওভারের মধ্যে ৪ উইকেট হারানো মোটেই ঠিক হয়নি। এ রকম উইকেটে এটা খুবই বাজে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী।’ পরাজিত হয়ে কয়েকজন প্লেয়ারকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাকিব আল হাসান।
১৮ ওভারে ৮৩ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও অবশ্য ঘুরে দাঁড়ানোর আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। তরুণ তুর্কি তাওহীদ হৃদয় মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি গড়ে সেই আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু মুশফিকের আউটে ৮২ রানের সেই জুটি ভেঙে যাওয়ার পরই আবার ধসে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। সাকিব নিজেই এই দায় নিলেন কিছুটা, ‘ আমার আরও ৭-৮ ওভার থাকা দরকার ছিল, আমাদের জুটিটা আরও কিছুক্ষণ থাকলে পরের দিকে লড়াই করার যেত। কিন্তু আমি আউট হওয়ার পর অনেক বেশি চাপ পড়ে মুশফিকুর এবং হৃদয়ের উপর, আসল সমস্যা হচ্ছে উপর থেকে কোনো জুটিই হলো না।’
সাকিব মনে করেন বাংলাদেশের যে সমস্ত ব্যাটসম্যানরা উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছে তাদের আরো দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছিল যার মধ্যে অন্যতম মহম্মদ নাঈম, মেহেদি মিরাজ এবং লিটন দাস। তিনজনের মধ্যে একজন ব্যাটসম্যান যদি হাফ সেঞ্চুরি করত তাহলে বাংলাদেশে এই ম্যাচটা জিততো। এই তিন ব্যাটসম্যান উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছে যার জন্য হৃদয় এবং মুশফিকের রান বাদ দিলে আর কেউ রান করতেই পারেনি। মিরাজকে এক্ষেত্রে দোষ দেওয়া যায় না কারণ তার আউটটা একদমই সফট ডিসমিসল ছিল। বাংলাদেশের ব্যাটিং যে কতটা বাজে হয়েছে, অধিনায়ক সাকিব সেটা বোঝালেন তাঁর দলের বোলারদের প্রশংসা করতে গিয়ে।
তাসকিন-শরীফুলদের বোলিংকে পাকিস্তানি বোলিংয়ের সঙ্গে তুলনা করে সাকিব বলেছেন, ‘ওদের দলে তিন পেসার আছে, যারা কাজটা অনেক সহজ করে দিয়েছে ওদের জন্য। আমরাও বোলিং বিভাগে বেশ ভালো করছি। কিন্তু আমাদের ব্যাটিংটা কখনো ভালো হয়, কখনো খারাপ। পাকিস্তানের পরে দ্বিতীয় সেরা বোলিং লাইনআপ আমাদের কাছে, আমাদের বোলাররাও কয়েক বছর ধরে ভালো বোলিং করছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন উইকেটে যদি ব্যাটসম্যানরা ভুল না করে, আপনি উইকেট পাবেন না।’
হার দিয়ে সুপার ফোর শুরু করা বাংলাদেশ পরের ম্যাচটা খেলবে ভারতের বিরুদ্ধে,। সেই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা সাকিবের, ‘আমি যখন সেখানে এলপিএল খেলেছিলাম, দেখেছি, পিচ কিছুটা ধীরগতির, কিছুটা উঁচু-নিচু। সেটা হয়তো আমাদের সাহায্য করবে। আশা করি, আমরা কলম্বোয় ভালো করব।’ সাকিব পেসারদের প্রশংসা করেছেন, ‘এত গরমের মধ্যেও এমন দারুণ বোলিং! কারণ, আগের দিন উইকেটে ঘাস দেখেছি এবং আমাদের সেটা ভালো লেগেছে। সবাই দারুণ বোলিং করেছে।’