ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হেসেখেলে তিন শ রান করেছে বাংলাদেশ দল। ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডের প্রথম ওয়ানডেতে আজ সেটি হয়নি। হয়নি হয়তো কন্ডিশনের কারণেই। মেঘলা আকাশের নিচে আইরিশ পেসাররা বল সুইং করিয়েছে, পেয়েছে সিম মুভমেন্ট। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কারো বড় ইনিংস খেলতে না পারায় যেটি অবশ্যই ভূমিকা রেখেছে। চেমসফোর্ডের উইকেট ব্যাটিংবান্ধব হওয়ায় তা–ও রক্ষা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও ছোট ছোট জুটি গড়তে পেরেছে বাংলাদেশ। তাতেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে ৯ উইকেটে ২৪৬ রান করেছে বাংলাদেশ। নিজের ৩৬তম জন্মদিনে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৬১ রান এসেছে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে।
বাংলাদেশ ধাক্কা খেয়েছে ইনিংসের শুরুতেই। প্রথম ওভারেই এলবিডব্লিউ লিটন দাস। ইনিংসের সেটি চতুর্থ বল, লিটনের খেলা প্রথম। বাঁহাতি পেসার জস লিটলের বলটা ছিল একদম ইয়র্কার লেংথে। ইনসুইং মেশানো বলটি ব্যাট নামানোর আগেই লিটনের সামনের বুটে গিয়ে লাগে।আরেক ওপেনার তামিম ইকবালের ইনিংসও দীর্ঘ হয়নি। তবে ১৯ বলে ১৪ রান করে আউট হওয়ার আগে বাউন্ডারিও মেরেছেন ২টি। মনে হচ্ছিল, তামিমের ইনিংসটা বড় হবে। কিন্তু এডেয়ারের অনেক বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন তামিম।দলীয় ১৫ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর ধাক্কাটা অবশ্য সামলে নেয় বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন ও সাকিব আল হাসান কঠিন কন্ডিশনটাও সামলে নিচ্ছিলেন।
সুইং এড়ানোর জন্য দুজনই ক্রিজের অনেকটা বাইরে দাঁড়িয়ে খেলছিলেন। যা আইরিশ বোলারদের লাইন-লেংথ বদলাতে বাধ্য করে। সেই সুযোগে কিছু বাউন্ডারি মারার বল পেয়ে যান দুই বাঁহাতি। সাকিব-নাজমুলরা সেটি কাজে লাগিয়েছেন।দুজনের প্রতি আক্রমণ বাংলাদেশকে পাওয়ার প্লেতে ৫০ রানে পৌঁছে দেয়। এরপরই ভুলটা করেন সাকিব। ইনিংসের ১২তম ওভারে গ্রাহাম হিউমের লেংথ বল ক্রিজ থেকে বেরিয়ে লেগ সাইডে খেলার চেষ্টা করেছিলেন। বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন ২১ বলে ২০ রান করা এই অলরাউন্ডার। তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে আবার ইনিংস মেরামতের চেষ্টায় নামতে হয় নাজমুলকে। ৬৩ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ে সেটি ভালোই করছিলেন দুজন। দলের রানও এক শ ছাড়ায় দুজনের সৌজন্যে।কিন্তু পুল শট খেলে ডিপ স্কয়ার লেগে থাকা এডেয়ারের হাতে ক্যাচ তোলেন তিনি।
৬৬ বলে ৪৪ রান করা নাজমুলও থিতু হয়ে আউট হওয়া ব্যাটসম্যানদের তালিকায় নাম লেখান। নাজমুলের পথ ধরেন হৃদয়ও। আউট হওয়ার আগে ৩২ বল খেলে করেছেন ২৭ রান । এরপর একাই লড়ে যান মুশফিকুর রহিম। তাঁকে কিছুটা সঙ্গ দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজনম মিলে গড়েছেন বাংলাদেশ ইনিংসের সর্বোচ্চ ৬৫ রানের জুটি। যা আরও দীর্ঘও হতে পারত। জর্জ ডকরেলের বলে মারতে গিয়ে মিরাজ (৩৪ বলে ২৭ রান) ক্যাচ আউট হলে রানের গতি কমে যায়। সর্বশেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে মুশফিকের রানের গতিও কমে আসে। মুশফিকের ফিফটি আসে এক সময়, বাংলাদেশের রানও দুই শ পেরিয়ে যায় এর আগেই।কিন্তু রানটাকে লড়াই করার মতো অবস্থায় নিতে মুশফিকের শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে হতো।
কিন্তু সেটি হতে দেননি লিটল। নিজের তৃতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে তুলে নেন মুশফিককে। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন মুশফিক। যার ৭০ বলে ৬১ রানের ইনিংসে ছিল ৬টি বাউন্ডারি। মুশফিকের আউটে বাংলাদেশের স্কোর পরিণত হয় ৭ উইকেটে ২২০ রানে।এরপর বাংলাদেশের রানটাকে আড়াইশ’র কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব তাইজুল ইসলাম ও শরীফুল ইসলামের। তাইজুল করেছেন ১৪ রান, শরীফুল ১৬। আয়ারল্যান্ডের হয়ে লিটল সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন। ২টি করে উইকেট এডেয়ার ও হিউমের।